ব্লগিং হোক বা সার্ভিস রিলেটেড ওয়েবসাইট, যে কোন ক্ষেত্রেই কন্টেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন একটি বিষয়। ভালো মানের কন্টেন্ট যেমন যেকোন ওয়েবসাইট কে সফলতার চূড়ায় নিয়ে যেতে পারে। ঠিক তেমনি অন্যদিকে, কন্টেন্ট এর মান ভালো নাহলে পড়তে পারেন বিভিন্ন ধরনের অসুবিধায়। আচ্ছা, এই ভালো মানের কন্টেন্ট বলতে আসলে কি বোঝায়? আপনার যদি একটি ওয়েবসাইট থেকে থাকে, আপনিও হয়তো কারো থেকে কন্টেন্ট রাইটিং সার্ভিস নিয়ে থাকেন। তো কিভাবে বুঝবেন আপনার রাইটার আপনাকে ভালো মানের কন্টেন্ট দিচ্ছে কিনা? আপনার মনেও যদি একই প্রশ্ন এসে থাকে, পড়ে ফেলুন এই আর্টিকেল টি। আশা করি, তারপর থেকে কিছুটা হলেও বুঝতে পারবেন আপনার রাইটার আপনাকে কোয়ালিটি কন্টেন্ট এর নামে ফাকি দিচ্ছে কিনা।
তাহলে আর দেরী কিসের? চলুন শুরু করি।
1.প্লাগারাইজড/কপি কন্টেন্ট কিনা চেক করে নিন:
সবার প্রথমে যেই বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে সেটা হল কন্টেন্ট টি কোথাও থেকে কপি করা হয়েছে কিনা। অনেক টুলস রয়েছে প্লাগারিজম চেক করার জন্য। ফ্রি এবং পেইড উভয় ভার্সনেই পেয়ে যাবেন বিভিন্ন টুলস। তবে, আমি আপনাকে রিকমেন্ড করবো পেইড টুলস ব্যবহার করতে। কোনটি ব্যবহার করবেন?
CopyScape ব্যবহার করতে পারেন। দামেও সাশ্রয়ী আর রেজাল্টও খুবই ভালো দেয়। ফ্রি-টুল গুলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সঠিক ভাবে প্লাগারিজম চেক করতে পারে না। তবে একান্তই যদি ফ্রি টুল ব্যবহার করতে চান Quetext এবং EduBirdie এই দুটো ব্যবহার করতে পারেন। তবে, কন্টেন্ট এর মত গুরুত্বপূর্ন একটি বিষয়ে কয়েক ডলার খরচ করে পেইড টুলস ব্যবহার করাই ভালো। আপনার ইনভেস্টমেন্ট বিফলে যাবে না। আপনার রাইটার যদি আপনাকে কপি করা কন্টেন্ট বা প্রতি বাক্যে দুই একটা শব্দ পরিবর্তন করে আপনাকে দিতে থাকে, আর আপনি যদি সেগুলোই আপনার সাইটে পাব্লিশ করে যেতে থাকেন, লং টার্মে আপনি বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হতে যাচ্ছেন। তাই, এখনি সতর্ক হোন। কপি কন্টেন্ট দিয়ে আপনি যত ভালোই এসইও করুন না কেন, বেশি দূর আগাতে পারবেন না। র্যাংক হওয়া তো অনেক দুরের কথা কন্টেন্ট ইনডেক্সিং এই সমস্যা দেখা দিবে। অনেককেই এই সমস্যায় পড়তে দেখেছি, কপি কন্টেন্ট এর জন্য গুগোল ইনডেক্স করছে না। পিং করে বা আরও বেশি ব্যাকলিংক করে কিছুতেই কিছু হয় না। হবে কি করে? ভূত তো রয়েছে সর্ষের মধ্যেই।
2.স্পিন কন্টেন্ট কিনা দেখে নিন:
স্পিন কন্টেন্ট হচ্ছে আর একটি ভয়ানক ফাঁদ। রাইটার যদি আপনাকে স্পিন কন্টেন্ট( টুলসের সাহায্যে কন্টেন্ট এর শব্দ পরিবর্তন করে সমার্থক শব্দ বসানো) দেয় তাহলে কিন্তু প্লাগারিজম চেক করে কিছুই পাবেন না। এদিকে আপনার ওয়েব সাইট পড়বে বিপদে।
ধরুন, কথার কথা কন্টেন্ট ইনডেক্স হল এবং ভিজিটর আসলো। তারপর কি হবে? স্পিন কন্টেন্ট এর প্রথম দু লাইন পড়েই ভিজিটর দৌড়ে পালাবে। কিভাবে বুঝবেন কন্টেন্ট স্পিন কিনা? একটু চোখ-কান খোলা রাখলেই এটা ধরতে আপনার খুব বেশী কষ্ট হবে না। প্রথমত, ম্যানুয়ালি কন্টেন্ট টি পড়ে দেখবেন। স্পিন কন্টেন্টের বেশীরভাগ বাক্যেরই স্ট্রাকচারের আগামাথা কিছুই ঠিক থাকে না। পড়লেই কেমন একটা গোজামিল মনে হবে। চলুন একটি উদাহরন দেখে নেওয়া যাক।
Before: We should not use spin articles on our website. Otherwise, it will harm our website in the long term. But, how to check spin content? There are several ways to check it. It’s better to check manually.
After Spinning: We ought not utilize turn articles in our site. Else, it will hurt our site in a long haul. Be that as it may, how to check turn content? There are a few method to check it. It’s smarter to check physically.
স্পিন করার পরে কন্টেন্ট এর কি হাল হয়েছে দেখুন। এখন এরকম কন্টেন্ট দিয়ে আপনি কি আশা করতে পারেন আপনার ভিজিটরদের থেকে? স্পিন কন্টেন্ট এর আরেকটি বড় সমস্যা হল কন্টেন্টের রিড্যাবিলিটি একদম জঘন্য করে ফেলে। কিভাবে চেক করবেন রিড্যাবিলাটি? অনেক টুলস রয়েছে, তবে আমার কাছে Hemmingway সবথেকে ভালো মনে হয়। স্কোর যদি ৬ বা এর নিচে থাকে তাহলে ভালো। কিন্তু ৬ এর উপরে গেলে ব্যাপারটি চিন্তার। আরেকবার মনে করিয়ে দিতে চাই। শধুমাত্র টুলসের উপর ভরসা করবেন না। নিজেও ম্যানুয়ালি একবার পড়ে দেখবেন।
3.গ্র্যামাটিকাল ভুল আছে কিনা দেখে নিন:
এটা খুবই গুরুত্বপূর্ন একটি বিষয়। শুধু কন্টেন্ট অরিজিনাল আর স্পিন না করা হলেই যে এর মান ভালো তা কিন্তু না। একই সাথে আপনার কন্টেন্ট হতে হবে গ্র্যামাটিক্যাল ভাবে ত্রুটিমুক্ত। অনেক সময় একটি কমা বাক্যের অর্থটাই পাল্টে দিতে পারে। কন্টেন্টের মধ্যে গ্রামাটিক্যাল ভুল থাকলে ব্যাপারটি খুবই দৃষ্টিকটু দেখায়।
কিন্তু ছোটবেলা থেকেই তো গ্রামারের নাম শুনলে কেমন একটা ভয়ভীতি কাজ করে আমাদের বেশীরভাগের মধ্যে। কিভাবে বুঝবো যে গ্রামারের কোন ভূল আছে কিনা?
Grammerly তো রয়েছেই। ব্যাসিক ভাবে দেখে নিতে পারবেন কন্টেন্ট এর গ্রামারের বিষয়াদি। এটা একটা রাইটিং স্কোরও শো করে বিভিন্ন বিষয়ের উপর ভিত্তি করে। ফ্রি এবং পেইড দুইটা ভার্সনেই ইউস করতে পারেবন। পেইড ভার্সনে কিছু বাড়তি সুবিধা রয়েছে। পেইড ভার্সন দিয়ে প্লাগারিজমও চেক করতে পারবেন। তবে, আমার কাছে গ্রামারলির প্লাগারিজম এর রেজাল্ট টা খুব একটা সুবিধাজনক মনে হয় না। কিন্তু। গ্রামারের জন্য এটি মোটামুটি ঠিকঠাক। এটিও মনে রাখতে হবে, এটি একটি টুল মাত্র। ১০০% সঠিক রেজাল্ট কিন্তু এটি দিতে পারবে না। এর জন্য আপনাকে সেই ম্যানুয়ালি ই চেক করে নিতে হবে। তবে যাদের গ্রামারে দূর্বলতা রয়েছে এবং অল্প সময়ের মধ্যে মোটামুটি ধারনা নিতে চান কন্টেন্টের গ্রামার সম্পর্কে তাদের জন্য এটি খুবই উপকারী একটি টুল।
4.কন্টেন্ট এর মাঝে তুলে ধরা তথ্যগুলি সঠিক কিনা:
কন্টেন্ট এর মাঝে অনেক সময় অনেক তথ্য উপাত্ত তুলে ধরা হয়। এই তথ্যগুলি কি আপনার রাইটার সঠিক দিয়েছে কিনা তা দেখে নিতে হবে। ব্যাপারটা শুনে একটু জটিল মনে হচ্ছে তাই না? এটি একটু সময়সাপেক্ষ, কিন্তু জটিল একদমই না।
গুগোল, বিং বা ইয়াহুর মত সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করে আপনি খুব সহজেই কোন তথ্যের সত্যতা যাচাই করে নিতে পারবেন। মনে রাখবেন, কোন ব্যপারে জানা না থাকলে সেটি সম্পর্কে লেখার কোন দরকার নেই। কিন্তু এটি খেয়াল রাখবেন, কোন ভাবেই রিডার যেন কোন ভুল ইনফরমেশন না পায় আপনার ওয়েবসাইট থেকে। এতে করে আপনারা ওয়েবসাইটের গ্রহনযোগ্যতা কমে যাবে, রিডার এবং সার্চ ইঞ্জন উভয়ের কাছে থেকেই। এরকম ভূল কিছুতেই করা যাবে না। আর একটু কথা, যে কোন সার্চ ইঞ্জিনেই কোন তথ্য সার্চ করার পর অনেক ধরনেরই রেজাল্ট দেখতে পাওয়া যায়। সকল সোর্স থেকেই তথ্য নেওয়া যাবে না। কোন তথ্য আপনার কন্টেন্ট এ ব্যবহার করার আগে সেটির সোর্স কতখানি বিস্বাসযোগ্য সেটি আগে বুঝে নিতে হবে।
এজন্য অবশ্যই তথ্য ও উপাত্ত গুলো নির্ভরযোগ্য সাইট থেকে নিতে হবে। এক্ষেত্রে Wikipedia এর সহায়তা নিতে পারেন। কোন কিছুর জরীপ দেখাতে চাইলে সাল ও তারিখ সতর্কতার সাথে মিলিয়ে নিতে হবে। কিছুটা সময় লাগলে ব্যয় করুন। কন্টেন্টের মাঝে যেন কোন ভূল কোন কিছু না থাকে সেটা নিশ্চিত করুন।
5.কন্টেন্ট টি আপনার লক্ষ্যের প্রতিফলন ঘটাতে পারছে তো?
ব্যাপারটি প্রথমে শুনে একটু খটকা লাগতে পারে। চলুন একটু গভীরে যাওয়া যাক। কোন কন্টেন্ট এর পিছনে অনেক ধরনেরই লক্ষ্য থাকতে পারে। এই ধরুন, লক্ষ্য হতে পারে আপনি কোন পন্য সেল দিতে চান, আপনার ব্যবসা সম্পর্কে সবাইকে জানাতে চান, আপনার সার্ভিস গ্রহন করাতে চান, কোন বিষয় সম্পর্কে জানাতে চান ইত্যাদি।
রাইটার এর থেকে কন্টেন্ট নেওয়ার পর এটাকে ভালো ভাবে পড়ে দেখুন। তারপর, আপনার লক্ষ্য অনুযায়ী এটিকে মিলিয়ে নিন এটি কতখানি সফল হয়েছে বলে বলে মনে হয় আপনার লক্ষ্যকে এর মাঝে সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলতে। একটি উদাহরন দিলে ব্যাপারটি আরও পরিষ্কার হবে। ধরুন, আপনি অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট এর সাথে যুক্ত আছেন। আপনি চান আপনার কন্টেন্ট টি পড়ে রিডার্সরা কন্টেন্ট এ উল্লেখিত পণ্যটি ক্রয় করুক। এখানে কন্টেন্ট এর মধ্যে কিছু ব্যাপার আছে কিনা তা দেখে নিতে হবে। প্রথমত, কন্টেন্ট এর মধ্যে রাইটার কি সেসব বিষয়গুলো উপস্থাপন করতে পেরেছে যা রিডার্সদেরকে অন্তত আম্যাজনের লিঙ্কে প্রাইস দেখতে নিয়ে যেতে ইনফ্লুয়েন্স করবে? একজন ক্রেতা হিসাবে ভেবে দেখুন, আপনি কি প্রোডাক্ট টি সম্পর্কে প্রয়োজনীয় সব তথ্য পেয়েছেন যা আপনার জানা দরকার? এমন কোন বিষয় কি সেখানে রয়েছে যা অন্য কোথাও সেভাবে তুলে ধরা হয়নি? এসব ব্যাপারই পারে আপনাকে অন্য কম্পিটিটর থেকে আলাদা করে তুলতে। এসব ব্যাপারগুলো ধরতে একটু সময় লাগতে পারে শুরুর দিকে। কিন্ত ঐ যে কথায় আছে না, গাইতে গাইতে গায়েন। ধীরে ধীরে এক সময় ঠিক বুঝে যাবেন। তখন, শুরুর দিকের তুলনায় সময়ও কম লাগবে।
তো, এই ছিল আজকের বিষয়গুলো। ইনশাল্লাহ, এটা রাইটিং বা কন্টেন্ট এর সাথে যুক্ত সবার কাজে আসবে। আশা করি, এখন থেকে আপনার বুঝতে খুব একটা অসুবিধা হবে না যে, আপনার কন্টেন্ট রাইটার আপনাকে ফাঁকি দিচ্ছে কিনা। এছাড়াও আপনার মনে যদি অন্য কোন প্রশ্ন থেকে থাকে কন্টেন্ট রাইটিং সার্ভিস এর ব্যাপারে, নির্দিধায় আমাদের কে জানান। কন্টেন্ট রাইটিং, এসইও, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ও ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সহ ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিভিন্ন বিষয়াদি জানতে ও সার্ভিস নিতে ক্রিয়েটিভ মার্কেটার্স বাংলাদেশের সাথেই থাকুন।